বাংলাদেশে সদ্য প্রয়াত সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মরদেহ ঢাকায় কবর দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত তাকে তাঁর আদি নিবাস রংপুরেই দাফন করা হচ্ছে।
জাতীয় পার্টির নেতা রুহল আমিন হাওলাদার বিবিসি বাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মি. এরশাদের স্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ার রওশন এরশাদ শেষ পর্যন্ত তাকে রংপুরেই দাফনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, বলেন মি. হাওলাদার।
এর আগে জেনারেল এরশাদের মরদেহ ঢাকায় কবর দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়ে গেলেও সে নিয়ে ব্যাপক বিরোধিতা করেন রংপুর শহরের মেয়র সহ সেখানকার স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতারা।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁর মরদেহটি রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয় দুপুরের পরপর।
তাঁর জনপ্রিয়তার কেন্দ্রবিন্দু রংপুর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে দুটার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন স্থানীয় লোকজন ও নানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি কিছুতেই সামনে এগুতে দিচ্ছিলেন না তারা।
এক পর্যায়ে জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ ও শহরের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি জেনারেল এরশাদের নির্মিত বাসভবন পল্লী নিবাসের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন।
স্থানীয় সাংবাদিক রতন সরকার জানিয়েছেন, সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ সেখানে জানাজার জন্য জড়ো হচ্ছিলেন।
মাইকে সকাল থেকেই বারবার ঘোষণা দিতে শোনা গেছে যে রংপুরেই এরশাদের মরদেহ শায়িত করতে হবে।
ছবির কপিরাইটছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
Image captionজাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক গড়ে উঠেছিল এরশাদকে কেন্দ্র করেই
এর আগেই শহরের মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান ও জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে এরশাদের মরদেহ তারা কোন মতেই ঢাকায় ফিরিয়ে নিতে দেবেন না।
তাদের দাবি ছিল, রংপুরেই জেনারেল এরশাদের দাফন হতে হবে এবং তাঁর বাড়ি পল্লী নিবাসে তাকে দাফনের জন্য একটি কবর ইতিমধ্যেই খোঁড়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে সাবেক এই স্বৈরশাসকের দাফন নিয়ে বেশ নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়।
জেনারেল এরশাদের নিজ এলাকা রংপুরে নানা ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন ও সেখানে তাঁর বিশেষ জনপ্রিয়তা ছিল।
দীর্ঘদিন রংপুরে তাঁর দল ছাড়া আর কেউই প্রভাব রাখতে পারেনি।
এদিকে আজ মঙ্গলবার সামরিক করবস্থানে এরশাদকে দাফন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত ছিল। গত ১৪ই জুলাই সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান তিনি।